স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের সময় একটি সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র তৈরির কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা কখনো করা হয়নি। এক বৈঠকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যখন ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, একই সময়ে একটি দ্বিতীয় রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে দুটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র - ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিন গঠন হওয়ার কথা ছিল।’ পুতিন জোর দিয়ে বলেন, ‘সবাই জানেন ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে ফিলিস্তিন কখনোই তৈরি হয়নি।’ তদুপরি পুতিনের মতে, ‘ফিলিস্তিনিরা সর্বদা যে ভূমিগুলো মূল ফিলিস্তিনি ভূমির অংশ হিসেবে বিবেচনা করে এসেছে, সেগুলো বিভিন্ন সময়ে এবং বিভিন্ন উপায়ে ইসরায়েল দখল করেছে। অবশ্যই তা সামরিক শক্তির সাহায্যে।’
পুতিনের মতে, ফিলিস্তিন সমস্যাটি মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলের প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে বাসা বেঁধে আছে। তিনি বলেন, ‘ইসলাম তাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে। জীবন এভাবেই সেখানে বিকশিত হয়েছে।
এগুলো একদম স্পষ্ট।’ তিনি আরো বলেন, ‘শুধু এখনই নয়, কয়েক দশক ধরে এমনটা চলে এলেও এটাকে অন্যায়ের বহিঃপ্রকাশ হিসেবে বিবেচিত করা হয়েছে। অবিশ্বাস্য মাত্রায় তা সবার কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা সব সময় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পক্ষে কথা বলেছি, যার মধ্যে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিষয়টি রয়েছে।’ তিনি মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটনের নীতির সমালোচনা করে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিদ্যমান মৌলিক রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের সমাধান খোঁজার পরিবর্তে আর্থিক সহায়তার দিকে মনোনিবেশ করার চেষ্টা করেছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘এই ধরনের পদক্ষেপগুলো শুধু উত্তেজনাকে আরো বাড়িয়ে তোলে। অথচ এখন দরকার সমঝোতার উপায় খুঁজে বের করা।’
পুতিন বলেন, ‘অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতিকে কোনোভাবে শান্ত করা সম্ভব হবে কি না তা স্পষ্ট নয়, তবে আমাদের অবশ্যই এর জন্য চেষ্টা করতে হবে, কারণ বিরোধপূর্ণ অঞ্চলের সম্প্রসারণ ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে পারে।’
উল্লেখ্য, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে নজিরবিহীন যুদ্ধ চলছে। গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামাস যোদ্ধাদের সশস্ত্র অনুপ্রবেশের পর পরিস্থিতির তীব্র অবনতি হয়েছে। হামাস এই হামলাকে জেরুজালেমের ‘টেম্পল মাউন্টে আল-আকসা মসজিদ’-এর বিরুদ্ধে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়া বলে মনে করে। এদিকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকা সম্পূর্ণ অবরোধ ঘোষণা করেছে। পাশাপাশি লেবানন ও সিরিয়ার কিছু এলাকায় হামলা শুরু করেছে।